|
প্রথম প্রচ্ছদ |
‘অভিনয় ত্রিপুরা’ এই মুহূর্তে গোটা
উত্তর পূর্ব ভারত থেকে প্রকাশিত একমাত্র নিয়মিত সাময়িক পত্রিকা যার বিষয় শুধুই
নাটক।
এর আগে আর একটিই এমন কাগজের কথা আমরা জানি। ‘কুশিলব’। ২০০৭এ এটি শিলচর
থেকে বেরিয়েছিল দীপেন্দু দাস এবং অমিতাভ দেব চৌধুরীর সম্পাদনাতে। সহযোগী সম্পাদক ছিলেন শেখর দেবরায়।
কিন্তু এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়ে উঠেনি। তার পরে থেকে, এই কাগজ ‘অভিনয়
ত্রিপুরা।’বেরুচ্ছে গেল ছ’বছর ধরে। বর্তমান সংখ্যাটি ৬ষ্ঠ বর্ষ, ২য় সংখ্যা। অথবা
জানুয়ারি-জুন ২০১৪ সংখ্যা। মুনমুন ঘটকের সম্পাদনাতে বেরোয় পশ্চিম ত্রিপুরার ,
দক্ষিণ বাধার ঘাট থেকে। নাটক যে অভিনয় করা
বা দেখবার বাইরেও একটি সাহিত্যিক বিষয়, সাধারণত আমাদের সাহিত্যের কাগজগুলোও ভুলে
থাকেন। তাই , নাটক প্রায়ই প্রকাশের মুখ দেখে না। উত্তর পূর্বাঞ্চলে বহু প্রতিভাবান
নাট্যকার থাকা সত্ত্বেও করতে গেলে নাটক পাওয়া ভার হয়। অভিনয় ত্রিপুরা এই ঘরানা
পালটে দিচ্ছে। নিয়মিত নাটক প্রকাশ করছে । যেমন এই সংখ্যাতে আছে কমল রায় চৌধুরী এবং
রেমি ফানকনের লেখা দুটি নাটক। দ্বিতীয়টি এর জন্যেও গুরুত্বপূর্ণ যে মূলে এটি খাসি
। খাসিয়া স্বাধীনতা যোদ্ধা তিরৎ সিংহের বিদ্রোহের উপরে ভিত্তি করে লেখা একটি
ঐতিহাসিক নাটকের বাংলা অনুবাদ করেছেন অসমের কবি গায়ক জ্যোতিষ কুমার দেব।
|
শেষ প্রচ্ছদ |
নাটক
নিয়ে আলোচনা আড্ডার অভাব হয় না কোনো। যে কোনো অভিনয় কিম্বা প্রতিযোগিতার এসব
অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আনুষ্ঠানিক আলোচনার আয়োজন না করলেও অভিনেতা, নাট্যমোদী দর্শকের
মধ্যে তরক বিতর্ক দানা বাঁধেই। কিন্তু সেগুলো ছাপা হয়ে স্থায়ী রূপ নেয় অতি স্বল্প।
ফলে স্থান-কালের গণ্ডি অতিক্রম করে ভাবনাস্রোতের ধারাবাহিকতা বলে কিছুই রক্ষিত হয়
না। সেই অভাবও পূরণ করে আসছে ‘অভিনয় ত্রিপুরা।’ বহু অভিনেতা অভিনেত্রী হয়তো জীবনে
কোনোদিন ভাবেন নি, নিবন্ধ লিখতে কলম ধরবেন, তাঁদের দিয়েও লিখিয়ে নিয়ে তাদের কাজের
নথিকরণ করে ফেলছে এবং ভাবনাকে একটা স্থায়ী রূপ দিয়ে ফেলছে—যা অবশ্যই
নাট্য-সংস্কৃতি গবেষকদের জন্যে এক বিশাল আকর সংগ্রহ হয়ে উঠছে। আর এই লেখকেরা কোনো
একটি শহর বা গ্রামের নয় গোটা উত্তর পূর্বাঞ্চল সহ বাকি ভারত, বাংলাদেশের লেখকদের
দিয়েও লিখিয়ে স্থানিক-কালিক নাট্য আড্ডা-আলোচনার চরিত্রই প্রায় পালটে দিচ্ছে। আশা
করছি এই উদ্যোগ গোটা পূর্বোত্তরের নাট্য চর্চার এক গুণগত পরিবর্তন নিয়ে আসতে সমর্থ
হবে অচিরেই। লেখা সংগ্রহে সম্পাদিকার শ্রম, মূদ্রণে যত্ন এবং নিষ্ঠা, রুচি বোধ এসবতো
প্রশ্নাতীতই। সেই সঙ্গে প্রতিটি সংখ্যাই আবার বিশেষ একটি বিষয় ধরে পরিকল্পনা করেন।
ফলে ভাবনার একটা সুশৃঙ্খল উপস্থাপন ঘটে। পাঠকেরও খেই ধরে রাখতে সুবিধে হয়। এই যেমন
বর্তমান সংখ্যার বিষয় ‘নাটক এবং রাজনীতি’। আধুনিক নাটকের একটি পুরোনো এবং বহু
চর্চিত বিষয়। কিন্তু সেই বিষয়কেই নতুন ভাবে উপস্থাপন করছেন লেখকেরা। লেখকের
স্থান-কালের বৈচিত্র লেখাগুলোতেও নিয়ে এসছে বৈচিত্র এবং নতুন স্বাদ-গন্ধ।
সম্পাদনা সমিতির অন্যতম সদস্য
কবি-অভিনেতা লক্ষণ কুমার ঘটক এই সংখ্যার পিডিএফ পাঠানোতে আমরা তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ।
আশা করছি অতীতের সংখ্যাগুলোও তিনি পরে পরে পাঠাবেন। পরের সংখ্যাগুলোতো পাঠাবেনই।
এই সংখ্যাদিয়ে ‘অভিনয় ত্রিপুরা’র ‘কাঠের নৌকা’ ভ্রমণ শুরু হলো। এই যাত্রা চলতেই
থাকবে। যদি লেখা পাঠাতে চান, বা ছাপা প্রতিলিপি পেতে চান তবে আগ্রহীদের জন্যে
ঠিকানা ইত্যাদি নিচে রইল। ছবিগুলোতে দু'বার করে ক্লিক করুন। বড় হয়ে যাবে। পড়তে পারবেন।
আজকালের প্রতিবেদন: নাট্য-পত্রিকা অভিনয় ত্রিপুরার ষষ্ঠ বর্ষ দ্বিতীয় সংখ্যা (জানুয়ারি ১৪ ) জুন ১৪- প্রকাশিত হয়েছে৷ আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি, মুম্বই, ত্রিপুরা, বাংলাদেশের নবীন-প্রবীণ নাট্যজনদের নানা লেখায় এই সংখ্যাটি সমৃদ্ধ৷ এবারের সংখ্যায় দুটি নাটক রয়েছে– কমল রায়চৌধুরির ‘ধর্মগোলা’ এবং রেমি ফানকনের ‘তিরৎ সিঙের অম্তিম দিন’৷ অন্যান্য লেখাগুলি হল থিয়েটারের পথে যাত্রা (মামুনুর রশিদ), বাংলা নাট্যে নারী কুশীলব (সুদীপ চক্রবর্তী), চন্দ্রগুপ্ত: কিছু কথা (অমৃত শিব), প্রসঙ্গ রাজনৈতিক নাটক (পার্থপ্রতিম আচার্য), ত্রিদিব চক্রবর্তী: এক আলোকিত সত্তা (নন্দিতা দত্ত), পশিমবঙ্গের মফঃস্বল নাট্যচর্চায় মহিলামহল (দুলাল চক্রবর্তী), থিয়েটারে রাজনীতি: ব্রডগেজ মহাসড়ক (সুব্রত রায়), লখনউ পূর্ণাঙ্গ বাংলা নাটক প্রতিযোগিতা (শৈলেন সাহা), ককবরক নাটকের অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ (রুহি দেববর্মা), রাজনৈতিক থিয়েটার (গৌতম ভট্টাচার্য), রাজনৈতিক থিয়েটার: কিছু প্রশ্ন কিছু ভাবনা (পার্থসারথি দেব), অবশেষে শে‘পিয়রের দেশে যাচ্ছি ভেসে ভেসে (নৃপেন্দ্র সাহা), একদিন আমাদের আড্ডায় (ঋতিনাভ বণিক), ছোট ছোট কথা (দেবীনা রক্ষিত), নাটক ও সামাজিক পর্যবেক্ষণ (কাজল দেমতী), আমার নাটক (সুমনা রায়), নাটককে ঘিরে ভাবনা (নীলাঞ্জন ঘোষ), উত্তর ত্রিপুরায় নাট্য আন্দোলনের রূপরেখা (মৈত্রেয়ী দাম), নিষিদ্ধ পল্লীর থিয়েটারে আমি (সমীর মিত্র), এক নাট্যজনের কিছু একাম্ত কথা (রঞ্জন গঙ্গোপাধ্যায়), অতুল বরদলৈর বৃক্ষর খোঁজ ও নরেন পাটগিরির রজা আহে (মৃণালজ্যোতি গোস্বামী), গ্রীন গ্রীন (লক্ষ্মণকুমার ঘটক)৷ পাওয়া যাবে: নব সাহিত্য কেন্দ্র (ওরিয়েন্ট চৌমুহনি), অক্ষর পাবলিকেশনস (জগন্নাথবাড়ি রোড), জ্ঞানবিচিত্রা (জগন্নাথবাড়ি রোড), নব গ্রম্হ কুটির (কলেজ স্ট্রিট, কলকাতা)৷ অভিনয় ত্রিপুরার পরবর্তী সংখ্যা প্রকাশিত হবে অক্টোবর ২০১৪-এ৷ জানিয়েছেন প্রকাশক৷
No comments:
Post a Comment