“ এতাবৎ কালের সাহিত্যের ইতিহাস আপোষমুখীনতা ও প্রতিষ্ঠানলুব্ধতার ইতিহাস। আমরা এই প্রবহমান গড্ডলিকায় একটা প্রতিস্রোত আনতে চাইছি। তাই প্রতিস্রোত বেরুলো।” আশির দশকের শুরুর দিকে শিলচর , করিমগঞ্জ, বদরপুরের একদল স্কুল ছুট, কলেজ পালানো , বনের মোষ তাড়ানো ছেলে মেয়ে বন্ধু মিলে হৈ চৈ করে এরকম জোরালো ঘোষণা দিয়েই বের করেছিল ‘প্রতিস্রোত’। এদের অনেকেই তখন ভারতের সমাজবদলের দিশা নিয়েও নেশাগ্রস্থ। পার্থপ্রতিম মৈত্র , যিনি ইতিমধ্যে ‘আসরাফ আলির স্বদেশ’ নামে এক সুপার এইট চলচ্চিত্র করে ঝড় তুলেছেন তাঁর নেতৃত্বে পরম ভট্টাচার্য, সুজিত দাস, কমল চক্রবর্তী, প্রদীপ পাল, ভাষ্কর দেব এমন আর অনেক বন্ধুরা মিলে প্রতিস্রোত বের করেন। মার্ক্সের সেই বিশ্বখ্যাত উক্তিকে একটু বদল করে ওরা বলছিলেন, ‘’...সাহিত্যিকেরা কেবল নানাভাবে জগৎকে ব্যাখ্যা করেছেন, কিন্তু আসল কথা হলো তাকে পরিবর্তন করা।”
কল্পনাকে সাহিত্যের বাস্তব হিসেবে পরিবেশন করবার অধিকার নিয়েই তাঁরা প্রশ্ন তুলেছিলেন। আর ঘোষণা করেছিলেন, “হ্যাঁ, আমরা প্রতিস্রোতে ননফিকশন (non-fiction) প্রচলন করতে চাইছি। খুঁজতে হবে, জানতে হবে , বুঝতে হবে তারপর লেখা।” সত্যি সত্যি বেশ ক’বছর তাঁরা তাই করেছিলেন। ইন্দিরা গান্ধীর হত্যার পর দেশ জুড়ে শিখ হত্যার লীলা হোক, কিম্বা বরাক উপত্যকার ভয়াল বন্যা, অসম আন্দোলন কিম্বা ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে শিলচরের তথা বরাকের সবচে বড় বাজার ফাটক বাজারের আগুনে পুড়ে যাওয়াকে বিষয় করেও তাঁরা বেশ কিছু অনুসন্ধানী লেখা তাও এক ব্যতিক্রমী ধাঁচে লিখে ঝড় তুলে দিচ্ছিলেন। কেউ তাদের বিরোধী শিবিরের হতে পারতেন , কিন্তু সেই ঝড়ের ঝাপটা থেকে গা বাঁচাতে পারতেন না।
সাপ্তাহিক আড্ডাতে বসে কে লিখবেন , কী লিখবেন, কীভাবে লিখবেন সেসব ঠিক করতেন। আশির দশক টেনেটুনে সেরকম চলেওছিল। সম্ভবত বাবরি মসজিদের ভাঙার বিরুদ্ধে গর্জে উঠার দিনগুলো অব্দি। তাঁরপর বন্ধুরা ছড়িয়ে যেতে শুরু করেন। দল ছোট হতে শুরু করে । ‘প্রতিস্রোত’ অনিয়মিত হয়ে পড়ে। একসময় এর অস্তিত্ব নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছিল। কিন্তু যে নীরব কর্মীটি সব সংশয়ের উর্ধে উঠে সেই সংশয়ের বাতি ফুঁ দিয়ে নিভিয়ে রেখেছেন তিনি সুজিত দাস। তাঁরই সম্পাদনাতে সম্প্রতি বেরুলো ‘প্রতিস্রোতে’র ২৭ বছর প্রথম সংখ্যা। ২৭ বছরের দ্বিতীয় সংখ্যা বেরুবে না। বেরুলে আঠাশ বেরুবে কিম্বা উনত্রিশ। সুজিত সেই আশা জাগিয়ে রেখেছেন। অনেকে সেই আশাতে দিন গুনেন এখনো। আপনারাও সেই তালিকাতে নাম লেখান । আপাতত এই প্রথম আন্তর্জালিকাতে পড়ুন ‘প্রতিস্রোত’। বরাক কিম্বা অসমের আজকের সাহিত্যের গতিবিধি বুঝতে ‘প্রতিস্রোত’কে বাদ দিলে হিসেব মিলবে না কিছুতেই, এ আমরা বলতে পারি নির্দ্বিধায়।
প্রতিশ্রোত : জুন ২০২০ by Sushanta Kar on Scribd
সময় করে পড়ব।
ReplyDeleteDarun prachesta.
ReplyDeleteDhonyobad Mrinalda! Tripurara lekhok , Sompadokder bolun tader kagoj pathete .
ReplyDeleteEKTA KAJE MOTO KAJ KORECHHO BOTEY
ReplyDelete-SAUMITRA BAISHYA/ SUBHANKAR CHANDA / GAUTAM CHAKRABARTY
TAHOLE ASHA KORTE PARI , NIJEDER EBONG BONDHUDER SOMOSTO PROKASHONA AMAKE PATHATE THABEN,AAR PATHATE BOLBEN! DHONYOBAD SAUMITRADA, GAUTAM EBNG SHUBHONKARDA!
ReplyDeleteNice to see this little mag online. Great work Sujitda. Long live Protisrut
ReplyDeleteThank You Debabrata! keep on reading this blog!
ReplyDelete